বন্ধ্যাত্ব কি?

একজন পূর্ণাঙ্গ রমণীর ডিম্বাশয় থেকে প্রতি মাসে একটি করে ডিম্বাণু নির্গত হয়। ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রজনন বয়স ধরা হলেও ৩৫ বছরের পর থেকে প্রজনন ক্ষমতা কমতে থাকে। প্রজনন বয়সের শেষ দিকে ডিম্বাণু নিঃসরণ প্রতি মাসে না-ও হতে পারে। প্রজনন বয়সের মধ্যে প্রতি মাসেই একজন মহিলার ২৮ থেকে ৩৫ দিন ব্যবধানে ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। ঋতুস্রাব মহিলাদের ডিম্বাণু নিঃসরণের একটি প্রমাণ। যদিও কখনো কখনো ডিম্বাণু নিঃসরণ ছাড়াও ঋতুস্রাব হতে পারে। ২৮-৩০ দিনের ব্যবধানে যাদের ঋতুস্রাব হয় তাদের সাধারণত ১৩তম, ১৪তম ও ১৫তম দিনগুলোর কোনো একসময় ডিম্বাণু নির্গত হয়। এ সময়কে বলে প্রজনন সময়। এ সময়ে স্বামী-স্ত্রীর মিলন হলে স্বামীর শুক্রাণু ও স্ত্রীর ডিম্বাণু ডিম্বনালির প্রায় শেষ প্রান্তে, অম্বুলা নামক জায়গায় মিলিত হলে নিষেক সংঘটিত হয়। নিষেকের ফলে যেটি তৈরি হয় সেটিকে ভ্রূণ বলে। এ ভ্রূণ চক্রবৃদ্ধি হারে বিভক্ত হতে থাকে এবং ডিম্বনালি অতিক্রম করে নিষেকের সপ্তম দিন জরায়ুতে প্রবেশ করে এবং জরায়ুগাত্রে দৃঢ় হয়ে স্থাপিত হয়। পরে এখানেই ধীরে ধীরে বড় হয়ে ২৮০ দিন পরে পূর্ণাঙ্গ মানবশিশু ভূমিষ্ঠ হয়। কিন্তু কোনো দম্পতি এক বছর জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ছাড়া একই সাথে বসবাস ও মিলনের পরও যদি সন্তান ধারণ না করে থাকেন, তাকে ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব বলে। এটি হতে পারে প্রাথমিক যাদের কখনোই গর্ভসঞ্চারণ হয়নি অথবা মাধ্যমিক যাদের আগে গর্ভসঞ্চারণের পর এখন আর গর্ভসঞ্চারণ হচ্ছে না। সাধারণত ৮০ শতাংশ দম্পতির চেষ্টার প্রথম বছরের মধ্যেই সন্তান হয়ে থাকে। ১০ শতাংশ দম্পতির দ্বিতীয় বছরের মধ্যে হয়ে থাকে। বাকি ১০ শতাংশের কোনো না কোনো কারণে সন্তান ধারণে অসুবিধা হয়ে থাকে এবং তাদের জন্যই সেপশাল চিকিৎসা দরকার। এই না হওয়ার পেছনে স্বামী-স্ত্রী দুজনের যে-কেউই কারণ হতে পারেন। আবার সমিমলিত অসুবিধার কারণেও হতে পারে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে শুধু স্বামী দায়ী, ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে শুধু স্ত্রী দায়ী এবং ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়েই দায়ী।