
পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশন
ভুমিকা
ডেলিভারির পর মাতৃত্বের আনন্দ ও চ্যালেঞ্জের মধ্যে একজন নতুন মা অনেক ধরণের মানসিক পরিবর্তনের মুখোমুখি হন। এর মধ্যে একটি বড় সমস্যা হলো পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশন, যাতে পৃথিবীর অনেক মা-ই ভোগেন। এই অবস্থা সাধারণ বিষণ্নতা থেকে শুরু হয়, তবে কখনো কখনো এটি গভীর মানসিক রোগে পরিণত হয়, যা মা ও শিশুর জন্য গুরুতর হতে পারে।
পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশন কি?
পোস্ট-পার্টাম মানে হচ্ছে বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পরবর্তী সময়। এই সময়ে একজন নারীর ডিপ্রেশনের উপসর্গ দেখা দিলে তাকে বলা হয় পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশন। সাধারণত ১৫ শতাংশ মা এই রোগে ভুগে থাকেন। সন্তান জন্ম দেওয়ার প্রথম দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে যেকোনো সময় এটি শুরু হতে পারে।১
পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে “ডেলিভারির প্রথম ৪ সপ্তাহের মধ্যে শুরু হওয়া বিষণ্নতার উপসর্গের একটি পর্ব” (Wisner, Moses-Kolko & Sit, 2010)২ অথবা ডেলিভারির প্রথম ৬ সপ্তাহের মধ্যে শুরু হওয়া (World Health Organisation, 2022)৩ বিষণ্ণতা হিসেবে।
এটি নির্ণয় ও চিকিৎসা না করলে মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে । এজন্য এই সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও যথাযথ প্রতিকার অপরিহার্য।
পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশনের পরিসংখ্যান
পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশন বিশ্বজুড়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্বজুড়ে প্রায় ১০% গর্ভবতী নারী এবং ১৩% সদ্য সন্তানের জন্ম দেওয়া মহিলাই মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হন- যা প্রধানত অবসাদ (ডিপ্রেশন)। উন্নয়নশীল দেশে এই হার আরও বেশি—গর্ভাবস্থায় প্রায় ১৫.৬% এবং প্রসবোত্তর সময় প্রায় ১৯.৮% নারী মানসিক অসুস্থতার শিকার হন।৪
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, এ সমস্যা সাধারণ বিষণ্নতা থেকে আলাদা হলেও মনোচিকিৎসা না নিলে এটি বেশ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং পরিবার ও শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে।
কারণসমূহ
পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশন বা প্রসবোত্তর বিষণ্নতার মূল কারণগুলো হলো প্রসবের পর হরমোনের পরিবর্তন, শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি, ঘুমের অভাব, এবং সামাজিক ও মানসিক চাপ। এছাড়া, ব্যক্তিগত মানসিক স্বাস্থ্যের পূর্ব ইতিহাস, গর্ভাবস্থায় ও প্রসব পরবর্তী সময়ে জটিলতা এবং শিশুর দেখাশোনার অতিরিক্ত চাপ এই ধরনের বিষণ্নতা সৃষ্টি করতে পারে।
প্রধান কারণসমূহ:
- হরমোনের পরিবর্তন: গর্ভাবস্থায় ও প্রসবের পর শরীরে হরমোনের মাত্রার দ্রুত পরিবর্তন ঘটে, যা মেজাজের ওপর প্রভাব ফেলে এবং বিষণ্নতা সৃষ্টি করতে পারে।
- শারীরিক ক্লান্তি ও ঘুমের অভাব: সন্তান জন্ম দেওয়ার পর শরীর অত্যন্ত ক্লান্ত থাকে এবং পর্যাপ্ত ঘুম না হলে তা মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা বিষণ্নতার কারণ হতে পারে।
- মানসিক ও সামাজিক চাপ: নতুন মা হিসেবে শিশুর দেখাশোনার অতিরিক্ত দায়িত্ব, নিজের শরীর ও জীবনের পরিবর্তন এবং সামাজিক সমর্থনের অভাবও পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশনের কারণ হতে পারে।
- মানসিক স্বাস্থ্যের পূর্ব ইতিহাস: যদি কারো আগে থেকেই বিষণ্নতা বা উদ্বেগজনিত সমস্যার ইতিহাস থাকে, তবে প্রসব পরবর্তী বিষণ্নতার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- গর্ভাবস্থা ও প্রসবের জটিলতা: গর্ভাবস্থায় কোনো জটিলতা দেখা দেওয়া অথবা প্রসব বেদনাদায়ক বা জটিল হলে তা মানসিক অবস্থার উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং বিষণ্নতার কারণ হতে পারে।
লক্ষণসমূহ:
Cleveland Clinic৫ এর একটি আর্টিকেল মতে, পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশনের লক্ষণ অনেক রকম হতে পারে। সাধারণ লক্ষণসমূহ হল:
- দুঃখ, নিজেকে মূল্যহীন মনে হওয়া, হতাশা বা দোষবোধ অনুভব করা
- অতিরিক্ত চিন্তা করা বা সবসময় অস্থির ও বিচলিত থাকা
- আগে যেসব কাজে বা শখে আগ্রহ ছিল সেগুলোতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা
- খাওয়ার অভ্যাসে পরিবর্তন বা খেতে ইচ্ছা না করা
- শক্তি ও অনুপ্রেরণার অভাব
- ঘুমে সমস্যা হওয়া বা সারাবেলা ঘুম পাওয়া
- কোনো কারণ ছাড়াই বা অত্যধিক কাঁদা
- চিন্তা করা বা মনোযোগে সমস্যা হওয়া
- আত্মহত্যার চিন্তা বা মরতে ইচ্ছে হওয়া
- শিশুর প্রতি আগ্রহ না থাকা বা শিশুর কাছে থাকলে উদ্বিগ্ন বোধ করা
- শিশুকে আঘাত করার ভাবনা বা শিশুকে কাছে না চাওয়া
এগুলো ছাড়াও Mayo Clinic৬-এর মতে পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশনের আরও কিছু লক্ষণ থাকতে পারে। যেমন-
- বিভ্রান্তি বা পথভ্রস্ট অনুভব করা
- শিশু সম্পর্কে অত্যধিক বা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বারবার চিন্তা করতে থাকা (অবসেসিভ চিন্তা)
- বাস্তব নয় এমন কিছু দেখা বা শোনা (ভ্রম/হ্যালুসিনেশন) এবং ভ্রান্ত ধারণা বা বিশ্বাস থাকা (বিভ্রান্তি)
- অতিরিক্ত শক্তি বা অস্থিরতা অনুভব করা এবং বেশি বিরক্ত বা উত্তেজিত থাকা
- অতিরিক্ত সন্দেহজনক বা প্যারানয়েড অনুভূতি থাকা
- নিজেকে বা শিশুকে আঘাত করার চেষ্টা করা বা সেই ধরনের পরিকল্পনা থাকা
যদি আত্মহত্যা বা শিশুকে আঘাত করার মতো চিন্তা থাকে, তাৎক্ষণিকভাবে আপনার ডাক্তার, মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় জরুরি সেবা বা কোনও বিশ্বস্ত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সাহায্য চাওয়া গুরুত্বপূর্ণ এবং দরকারে জরুরি সহায়তা নিন।
প্রতিকার ও চিকিৎসা:
পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশনের চিকিৎসা সাধারণত থেরাপি (যেমন কগনিটিভ বিহেভিওরাল থেরাপি), অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ঔষধ, এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের (যেমন পর্যাপ্ত বিশ্রাম, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ) মাধ্যমে করা হয়। পরিবার ও বন্ধুদের সহায়তা, বিশ্রাম এবং মানসিক চাপ কমালে এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। গুরুতর ক্ষেত্রে পেশাদারী সাহায্য ও প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার হতে পারে।
১. মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের সাহায্য:
- অবশ্যই একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ (Gynecologist), মনোরোগ বিশেষজ্ঞ (Psychiatrist), বা মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
- থেরাপিস্টের সাহায্যে একটি বই বা অনলাইন কোর্স অনুসরণ করে নিজেই সমস্যা মোকাবিলা করা যেতে পারে। কোর্সের বিষয়বস্তুগুলো সাধারণত আপনার সমস্যা অনুযায়ী গঠন করা থাকে এবং কীভাবে তা মোকাবিলা করতে হবে তার সহজ ও ব্যবহারিক নির্দেশনা কোর্সেই দেওয়া থাকে। এ ধরনের কোর্স সাধারণত ৯ থেকে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত চলে।৭
২. ঔষধ ও থেরাপি:
- মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে হবে। অবস্থা বুঝে প্রয়োজন মনে হলে তিনি ওষুধ দিতে পারেন।
- কগনিটিভ বিহেভিওরাল থেরাপি (CBT) এর মতো কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমেও এই সমস্যা মোকাবিলা করা যায়।
৩. জীবনযাত্রার পরিবর্তন:
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম: নতুন শিশুর যত্নের পাশাপাশি নিজে বিশ্রাম নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
- নিয়মিত ব্যায়াম: হালকা ব্যায়াম, যেমন শিশুর সাথে রোদে হাল্কা হাঁটাচলা করা মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। সপ্তাহে ৩–৪ বার (প্রতিটি সেশনে ৩৫–৪৫ মিনিট) ব্যায়াম করা সবচেয়ে ভাল।৮
- সুষম খাদ্য: পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। কারণ বি ভিটামিন, ওমেগা‑৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ডি এবং জিঙ্কের মতো পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি বিষণ্ণতার লক্ষণ হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।৯
- পর্যাপ্ত পানি: পানিশূন্যতা রোধে প্রতিদিন অন্তত ৬–৮ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত। দুধ উৎপাদন বাড়াতে বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর পূর্বে এক গ্লাস পানি পান করা উত্তম।
- মানসিক চাপ কমানো: নতুন দায়িত্বের বোঝা কমাতে হবে, অতিরিক্ত কাজ এড়িয়ে চলতে হবে এবং মানসিক চাপ কমানোর জন্য শিথিলকরণ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।
৪. পরিবার ও বন্ধুদের সহায়তা:
- পরিবার ও বন্ধুদের সহায়তা এই সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- তারা যেন মায়ের যত্ন নিতে সাহায্য করে, ঘরের কাজে হাত লাগায় এবং নতুন মায়ের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রামের ব্যবস্থা করে।
৫. কী এড়িয়ে চলতে হবে:
- নিকোটিন, অ্যালকোহল এবং অন্যান্য মাদকদ্রব্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ এগুলো বিষণ্নতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং শিশুর ক্ষতি করতে পারে।
তাছাড়া Cleveland Clinic আরও কিছু উপদেশ দিয়েছে।৫ সেগুলো হল:
- একজন থেরাপিস্ট, বন্ধু, পরিবারের কেউ বা এমন কেউ যিনি আপনাকে কথা বলার সুযোগ দেবেন এবং সমর্থন করবেন তার সাথে নিজের অনুভূতিগুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
- নতুন পিতামাতাদের জন্য বিভিন্ন সাপোর্ট গ্রুপ রয়েছে, সেগুলোতে যোগ দিন।
- স্বাস্থ্যকর খাদ্য খান এবং ব্যায়ামের জন্য সময় বের করুন।
- নিজের বিশ্রামকে প্রথমে রাখুন।
- বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে যান বা ফোনে কথা বলুন।
- নিজের যত্নের জন্য সময় নিন এবং এমন কাজ করুন যা আপনাকে আনন্দ দেয়, যেমন পড়া বা কোনো শখ পালন।
- গৃহকাজ বা বাজার‑কাজে সাহায্য নিন।
পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন একটি গুরুতর অসুস্থতা এবং দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসা এর থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য অপরিহার্য।
পরিবারের ভূমিকা
পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশন বা প্রসবোত্তর বিষণ্নতা একটি গুরুতর মানসিক অবস্থা, যেখানে পরিবারের সদস্যদের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের উচিত মাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে সহায়তা করা যেমন- ঘরোয়া কাজে সাহায্য করা, শিশুকে দেখাশোনা করা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে উৎসাহিত করা। এছাড়াও, মায়ের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া এবং তার অনুভূতিগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
পরিবারের ভূমিকা:
- সহযোগিতা ও সমর্থন: পরিবারের সদস্যরা প্রসবোত্তর বিষণ্নতায় ভোগা মাকে প্রাথমিক পর্যায়ে সাহায্য করতে পারেন। তাদের উচিত মাকে ঘরোয়া কাজ ও শিশুর যত্ন নিতে সাহায্য করা।
- সচেতনতা বৃদ্ধি: পরিবারের সদস্যদের প্রসবোত্তর বিষণ্নতার লক্ষণ ও কারণ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। এতে তারা দ্রুত মায়ের অসুস্থতা শনাক্ত করতে পারবেন এবং সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারবেন।
- চিকিৎসায় সহায়তা: যদি মায়ের লক্ষণগুলো দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে পরিবারের উচিত তাকে পেশাদার সাহায্য নিতে উৎসাহিত করা। এক্ষেত্রে একজন চিকিৎসক বা মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া জরুরি।
- ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি: মাকে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দিতে এবং সুস্থ থাকার জন্য একটি ইতিবাচক ও সহযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করা পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এতে মা নিজেকে একা মনে করবেন না এবং মানসিক শক্তি ফিরে পাবেন।
- যোগাযোগ ও সহমর্মিতা: মাকে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করার সুযোগ দিতে হবে এবং তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। তার প্রতি সহমর্মিতা দেখানো এবং তার সব ধরনের অনুভূতিকে সম্মান জানানো জরুরি।
সঠিক সময়ে পরিবারের সহযোগিতা এবং প্রয়োজনে পেশাদার চিকিৎসার মাধ্যমে প্রসবোত্তর বিষণ্নতায় আক্রান্ত মায়ের সুস্থ হওয়া সম্ভব।
নিয়মিত চেক আপ
পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন বা প্রসবোত্তর বিষণ্নতার জন্য নিয়মিত চেক আপ ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। এই অবস্থায় পেশাদারদের (সাইকিয়াট্রিস্ট বা সাইকোলজিস্টের) সাহায্য প্রয়োজন। চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে ওষুধ, কাউন্সেলিং, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন (যেমন ব্যায়াম ও সূর্যালোক), এবং পরিবার ও সঙ্গীর সহায়তা অন্তর্ভুক্ত। যেকোনো গুরুতর মানসিক সমস্যা যেমন আত্মহত্যার চিন্তা বা নিজের ও শিশুর ক্ষতি করার চিন্তা এলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে হবে।
নিয়মিত চেকাপের গুরুত্ব
- সময়ের আগেই সনাক্তকরণ: সন্তান জন্মদানের পর পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন একটি সাধারণ বিষয়, যা প্রায় ১৫% মায়ের ক্ষেত্রে দেখা যায়।১ নিয়মিত চেকাপ করলে এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো সনাক্ত করা যায় এবং সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
- ঝুঁকির কারণ নির্ণয়: গর্ভকালীন বা প্রসব পরবর্তী সময়ে যেসব কারণ, যেমন মানসিক চাপ, বিষণ্নতার ইতিহাস, বা সহায়তার অভাব, ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে তা চিহ্নিত করা যায়।
- সঠিক চিকিৎসা: গাইনোকোলজিস্ট বা অবস্টেট্রিশিয়ানকে নিজের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কথা জানানো প্রয়োজন। তারা প্রয়োজন অনুযায়ী মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারদের কাছে পাঠাতে পারেন।
উপসংহার
পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন শিশুর জন্মের পর দেখা দিতে পারে, এটি গুরুতর কিন্তু চিকিৎসাযোগ্য অবস্থা। লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে ডাক্তার বা মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করআ উচিত। থেরাপি, প্রয়োজনে ওষুধ এবং পরিবারের সমর্থনে অনেকেই সুস্থ হন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সুষম পুষ্টি ও সামাজিক সাহায্য দ্রুত উন্নতিতে সহায়ক। মনে রাখতে হবে যে সাহায্য চাওয়া দুর্বলতার নয়, বরং শক্তির পরিচায়ক। তাই মা, পরিবার ও সমাজের উচিত এই বিষয়ে সচেতন হওয়া ও সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়া।