এই ৭টি টিপস আপনার বেবিকে পরিচ্ছন্ন আর সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করবে

প্রসবের পর পরই নবজাতকের যত্নের ব্যাপারে সদা সতর্ক থাকতে হবে। এ সময়ের যত্ন-আত্তির ওপর নির্ভর করে শিশুর
পরবর্তী জীবনের সুস্থতা এবং কর্মদক্ষতা।
তাই বাবা মাকে নবজাতকের পরিষ্কার পরিছন্নতার দিকে খুব বেশি নজর রাখতে হবে। আপনার শিশুকে সুস্থ্য রাখার জন্য
পরিছন্নতার এই ৭টি টিপস মেনে চলুন।
১) গোসল
নবজাতকের জন্মের ৪৮ ঘণ্টা পর তৃতীয়
দিন গোসল করানো যেতে পারে। এই সময় শিশুর
চুল কাটানোর প্রয়োজন নেই কারন প্রাথমিক চুল পরে গিয়ে স্বাভাবিক নিয়মেই পরিনত চুলে
উঠবে। নবজাতকের নাভি শুকাতে এক থেকে চার সপ্তাহ
পর্যন্ত সময় লাগে বিধায়
এ
সময় পর্যন্ত সপ্তাহে দু-তিনবার স্পঞ্জ বাথ দিতে হবে। গোসলের সময় অবশ্যই
পরিষ্কার জীবাণুমুক্ত হালকা গরম
পানি,শিশুদের উপযোগী ময়েশ্চারাইজিং সাবান , শুকনো ও জীবাণুমুক্ত পোশাক ও তোয়ালে
ব্যবহার করতে হবে।
শিশুর বিভিন্ন অংগ যেমন
নাক,
কান, কানের পাশ, দেহের ভাঁজ ইত্যাদি
পরিচ্ছন্ন
রাখার ভালো উপায় গোসল। গর্ভ থেকে লেপ্টে থাকা রক্ত, এইচআইভি, হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের
মতো জীবাণু সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে গোসল করানো খুব প্রয়োজন।
খুব বেশি সময় ধরে নব্জাতকের গোসল করানো উচিৎ নয়। গোসলের পর শুষ্ক
তোয়ালে দিয়ে পুরো শরীর ভালোভাবে মুছে দিতে হবে। প্রতিদিন হালকা গরম পানিতে শিশুকে একবার
গোসল করানো যেতে পারে। ডাক্তারের বারণ থাকলে কাপড় ভিজিয়ে
শরীর মুছে দিতে হবে। শীতের দিনে বেবি অলিভ অয়েল মাখিয়ে
হালকা রোদে বসা যেতে পারে তবে লক্ষ্য রাখতে হবে রোদ যাতে কড়া না হয়।
২) ডায়াপারের ব্যবহার
এখনকার ব্যস্ত জীবন আর দীর্ঘ সময়
বাচ্চা নিয়ে বাইরে থাকার কারনে ডায়াপার তো ব্যবহার করতেই হয়। কিন্তু বাচ্চার
সেনসিটিভ ত্বকে সহনীয় নয় এমন উপাদানে তৈরি ডায়াপার তার জন্য কষ্টদায়ক হয়ে উঠবে।
এছাড়া যেসব ডায়াপারের শোষণক্ষমতা কম তা দ্রুতই লিক বা ওভারফ্লো করে বাচ্চার ঠান্ডা
বা র্যাশ সৃষ্টি করতে পারে। তাই ভালমানের ডায়াপার বেছে নিন এবং একটি
ডায়াপার ছয় ঘন্টার বেশি ব্যবহার করবেন না। প্রতিবার ডায়াপার পরিবর্তনের সময় পায়খানা-প্রস্রাবের স্থান ওয়াইপস দিয়ে আলতোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। মেয়েশিশুর
বেলায় সামনে থেকে পেছন দিকে নরম স্পর্শে পরিষ্কার করতে হবে। এতে মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ
হওয়ার ঝুঁকি কমে আসে।
৩) নাভি,
নাক ও চোখে
ভূমিষ্ঠ
হওয়ার পর নাড়ি শুকিয়ে যায় এবং ৫-১০ দিন পরে
আপনা থেকেই ঝরে পড়ে। এর জন্য নাভিতে কোনো কিছু লাগানোর প্রয়োজন হয় না। গরম
জলে কটন ভিজিয়ে খুব আলতোভাবে চোখের
পাতা পরিষ্কার করতে হবে। ত্বকের খসখসে ভাব দূর করতে অলিভ ওয়েল বেশি গ্রহণযোগ্য।
৪) পরিষ্কার স্থানে রাখা
শিশুদের সব সময় পরিষ্কার স্থানে রাখতে হবে। অপরিষ্কার স্থান
শিশুদের জন্য খুব মারাত্নক এতে করে অনেক ধরণের জীবাণু শিশুর শরীরে প্রবাহিত হতে পারে।
শিশুকে তাই সব সময় পরিষ্কার, শুকনো এবং জীবাণুমুক্ত স্থানে রাখতে হবে। শিশুকে যে কাপড়
এর উপর রাখা হবে সেটাও যেন ভাল পরিষ্কার হয়।
৫) শিশুকে কোলে নেয়া
শিশুকে সবার কোলে দিতে দেয়া যাবে না। এতে অনেকে হয়তো মন খারাপ
করতে পারে কিন্তু শিশুর শরীরের দিকে খেয়াল করে এটা মেনে নিতে হবে। শিশুকে কোলে নেয়ার
আগে বাবা মা বা যেই হোক আগে জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। বাইরে থেকে এসে হুট করে বাচ্চার গায়ে
হাত দেয়া যাবে না। শিশুদের শরীর অনেক বেশি সংবেদনশীল। তাই শিশুকে অনেক যত্নে লালন পালন
করতে হয়।
৬) নখ ও দাঁত
ছোটবেলা থেকেই শিশুদের নখ ও দাতের পরিচর্যা বাবা মার শুরু করতে
হবে। নখ একটু বর হলেই তা কেটে দিতে হবে। আবার আংগুল দিয়ে বাচ্চার মাড়িতে হালকা পরিষ্কার
করে দিতে হবে। যেহেতু নবজাতকের মুখে কোন দাঁত থাকে না তাই কোন ধরণের পেস্ট ব্যবহার
করার প্রয়োজন নেই।
৭) শোয়ার
স্থান
শিশুর শোয়ার স্থান হতে হবে অনেক বেশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। শিশু
যেখানে ঘুমোবে সেখানে শিশু নড়া চড়া করার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা দিতে হবে। যে রুমটিতে
শিশুকে রাখা হবে সেই রুমটি হতে হবে অনেক বেশি খোলামেলা। চারদিকে আলো বাতাস খেলা করার
জন্য পর্যাপ্ত জানলা ও দরজা থাকতে হবে। অল্প আওয়াজে শিশুর ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে। তাই
শিশুর শোয়ার ঘরের রুমটিতে যাতে করে খুব বেশি আওয়াজ আস্তে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে
হবে।
পরিশিষ্ট
শিশুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে গড়ে তোলার প্রধান দায়িত্ব বাবা
মার। ছোটবেলা থেকে যদি শিশুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে গড়ে তোলা না যায় তাহলে শিশুকে
নানা ধরণের জীবাণু আক্রমণ করতে পারে। তাই বাবা-মা হিসেবে আজ থেকেই আপনার
শিশুর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার উপায়গুলো যথাযথভাবে
মেনে চলুন। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই শিশু যাতে সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে পারে
তার লক্ষ্য রাখা আমাদের একান্ত দায়িত্ব।
আমাদের কেয়ার লাইনে
ফোন করে রবি থেকে বৃহস্পতিবার (সরকারী ছুটির দিন বাদে) সকাল ৯টা থেকে বিকাল
৫টা পর্যন্ত সুপারমম এর ডাক্তারদের সাথে সরাসরি পরামর্শ করতে পারেন মা ও শিশু
বিষয়ক যেকোন সমস্যা নিয়ে। আমাদের টোল ফ্রি নাম্বার ০৮-০০০-৮৮৮-০০০
সর্বাধিক জনপ্রিয় আর্টিকেল
-
শিশুর টিকা
-
কম ওজন নিয়ে জন্ম নেয়া বাচ্চাদের যত্ন
-
জ্বরে আক্রান্ত শিশুর পরিচর্যার টিপস
-
নবজাতকের ত্বকের ৫টি কমন সমস্যা
-
আপনার বেবি কী প্রায়ই ফ্লু বা সর্দিজ্বরে ভোগে?
-
এই ৭টি টিপস আপনার বেবিকে পরিচ্ছন্ন আর সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করবে
-
প্রিম্যাচিউরড বেবির যত্ন
-
বাচ্চার স্বাভাবিক গ্রোথ এর জন্য পুষ্টির এই ৭টি বিষয় খেয়াল করুন