বাচ্চাদের দাঁতের যত্নে করনীয়

শিশুদের
প্রথম দাঁত উঠার সময়টি খুবই গুরত্বপূর্ণ। এসময় পর্যাপ্ত যত্ন ও সতর্কতা অবলম্বন করাই
পারে শিশুকে ভবিষ্যতে সুন্দর ও রোগ মুক্ত দাঁতের নিশ্চয়তা দিতে। অনেকেই ভাবতে পারেন
প্রথম যে দাঁত উঠে সেগুলো তো কিছুদিন পরে পড়ে যায়, তাহলে এতো যত্ন নেয়ার প্রয়োজন কি?
এটা খুবই ভুল ধারণা। মনে রাখবেন, প্রতিটি
দাঁতই মূল্যবান। এসময় দাঁতের যত্নে অবহেলা করলে দাঁতে জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে। শুধু
তাই নয়, প্রথম উঠা দাঁতগুলো যদি দ্রুত পড়ে যায়, তবে প্রাপ্ত বয়সে দাঁত পুনরায় উঠার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে এবং শিশুর
কথা বলার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই দাঁত উঠার আগে থেকেই শিশুর মুখ ও ভবিষ্যৎ দাঁতের ক্ষেত্রে যত্নবান
হতে হবে।
১) শিশুর বয়স যখন ০-৬ মাস
শিশুদের
দাঁত উঠার প্রাথমিক সময়সীমা হচ্ছে ০-১২ মাস বা শিশুর জন্মের ১ বছর বয়সের মাঝে। তবে সাধারণ ভাবে
গড়ে ৬ মাস বয়সের মাঝেই অধিকাংশ শিশুর দাঁত উঠে যায়। শিশু যখন মায়ের জরায়ুতে অবস্থান
করে তখন থেকেই তার দাঁত গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। তাই এসময় মায়েরা যে খাবারের
সাথে যে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান ( ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস)
গ্রহণ করেন, তা তার গর্ভস্থ্য শিশুর ভবিষ্যৎ
দাঁত গঠনে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
যা লক্ষ্য রাখবেন
শিশুদের
প্রথম যখন দাঁত উঠে তখন মাঢ়ির যেখানে দাঁত উঠে সেই জায়গাটি বিবর্ণ বা লালচে হয়ে যেতে
পারে। এছাড়া সেই জায়গাটি কিছুটা ফুলে যেতে পারে। তবে দাঁত উঠার সাথে সাথে এ ব্যপারগুলো
আর থাকে না।
যা করণীয়
হাতের আঙ্গুল
বা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে শিশুর মুখ ও মাঢ়ি নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। নতুন দাঁত উঠার আগে
মাঢ়ির সেই জায়গাতে ছোট গর্ত তৈরি হতে পারে। এখানে ব্যাক্টেরিয়া লুকিয়ে থাকতে পারে ও
রোগ সংক্রমণ করতে পারে। যখন শিশুর ছোট দাঁত উঠতে শুরু করবে, নিয়মিত পরিষ্কার কাপড় দিতে
বা পানিতে ভেজানো নরম টুথ ব্রাশের সাহায্যে শিশুর দাঁত পরিষ্কার করুন। এটা প্রতিদিন
সকালে খাবারের আগে ও রাতে ঘুমাতে যাবার আগে করুন, যাতে আপনার
শিশু দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাসটিতে অভ্যস্ত হয়ে যায়।
শিশুর প্রথম দাঁত উঠার
৬ মাস পরই দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিশেষ করে যারা পেডিয়াট্রিক ডাক্তার ও শিশুদের
দাঁতের চিকিসার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ তাদের পরামর্শ নিতে চেষ্টা করুন।
২) শিশুর বয়স যখন ৬ মাস- ১ বছর
আপনার শিশুর
প্রথম জন্মদিনের মাঝেই তার মুখে বেশ কয়েকটি দাঁত উঠে যাবার কথা। সাধারণ ভাবে অন্তত
৮ টি দাঁত।
যা লক্ষ্য রাখবেন
শিশুর যে
কয়টি দাঁত উঠুক না কেন, সেগুলোর অবস্থান কিভাবে রয়েছে তা লক্ষ্য করুন। অর্থাৎ শিশুর দাঁত ফাঁকা
ফাঁকা বা ঘন সন্নিবেশিত কিনা। শিশুকে দাঁতে এসময় "ফ্লস"
করাতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে ডেন্টাল ফ্লসিং কিভাবে করাবেন সে বিষয়ে
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
যা করণীয়
এসময় নতুন
দাঁত উঠার কারণে যদি শিশু কান্নাকাটি করে বা মুখে ব্যথা অনুভব করে, তবে হাতের আঙ্গুল বা পরিষ্কার
কাপড় দিয়ে তার দাঁত ও মাঢ়ি পরিষ্কার করে দিন। এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে পেইন
কিলার ব্যবহার করা যেতে পারে।
এছাড়া গবেষনায় দেখা
গেছে, যেসব শিশুর ১ বছর বয়স থেকেই দাঁতের যত্ন
সঠিকভাবে নেয়া হয়, প্রাপ্ত বয়সে তাদের অন্যদের তুলনায় তাদের দাঁতের ক্যারিজ বা ক্ষয় অনেক কম হয়।
৩) শিশুর বয়স যখন ১২ মাস-১৮ মাস
যদি ১৮ মাস
বয়সেও আপনার শিশুর দাঁত না উঠে, তবে চিন্তিত না হয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সাধারণত এসব ক্ষেত্রে ডাক্তাররা
শিশুদের মাঢ়িতে হাতের আঙ্গুল দিয়ে ঘষা বা rub করতে বলেন,
যাতে দাঁত উঠার ব্যপারটা সহজ হয়।
যা লক্ষ্য রাখবেন
নতুন দাঁত
উঠলে শিশুরা দাঁতে দাঁতে ঘষা লাগিয়ে আনন্দ পায়, কারণ এরকম করলে মুখের মাঝে শব্দ সৃষ্টি হয়। ব্যপারটা তাদের
কাছে অনেকটা খেলার মতো। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এটা শিশুর দেহে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির
নির্দেশক ও বটে। হতে পারে সে ক্লান্ত, কিংবা ঠান্ডা বা গরম
অনুভব করছে অথবা সর্দি লেগেছে। এগুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখুন।
যা করণীয়
এসময় শিশুর
জন্য নরম টুথ ব্রাশ ব্যবহার করা শুরু করুন। ফ্লুরাইড যুক্ত টুথ পেস্ট পরিহার করুন।
শিশুকে দাঁত ব্রাশ করত সহযোগিতা করুন। এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ
নিতে ভুলবেন না যেন!
আমাদের কেয়ার লাইনে ফোন করে রবি থেকে বৃহস্পতিবার (সরকারী ছুটির দিন বাদে) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সুপারমম এর ডাক্তারদের সাথে সরাসরি পরামর্শ করতে পারেন মা ও শিশু বিষয়ক যেকোন সমস্যা নিয়ে। আমাদের টোল ফ্রি নাম্বার ০৮-০০০-৮৮৮-০০০