খেলনা ও উপহার

শিশুদের জন্য খেলনা বাছাই করা বড়দের পক্ষে একটি কঠিন কাজ। আপনার সন্তান কোন খেলনাটি পছন্দ করে তা বুঝতে পারাটাও জটিল। শিশুর বয়স অনুযায়ী খেলনা বাছাই করতে পারলে সবচেয়ে ভালো। কেননা বয়সের তুলনায় বড়দের খেলনা দিয়ে তার খেলাধুলা করা উচিত হবে না।

 

আপনার সন্তানের বয়স এক বছর হলে তাকে উজ্জ্বল রঙের খেলনা দিতে পারেন। এই বয়সের শিশুদের কখনই সুতা বা তার জড়ানো খেলনা দেয়া ঠিক নয়। কেননা খেলার সময় অসাবধানতাবশত গলায় জড়িয়ে দুর্ঘটনার আশংকা থাকে।

 

যখন সন্তানের বয়স দু পা দেবে, তখন রঙিন শক্ত ধরনের বই দিতে পারেন। সেই সাথে ফোম বা পস্নাস্টিকের তৈরি খেলনা দেয়া যেতে পারে। এছাড়া এই বয়সের শিশুদের মিউজিক জাতীয় খেলনা দেয়া উত্তম। মিউজিক শুনিয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে পারবেন। সন্তানের বয়স তিনের কোঠায় পৌঁছলে ড্রয়িং খাতা বড় পেনসিল দেবেন আঁকাআঁকি করার জন্য। সেই সাথে টেনে নেওয়া যায় এমন খেলনা গাড়িও দিতে পারেন।

 

শিশুর বয়স যখন চার থেকে পাঁচ হবে, তখন তার খেলার জন্য বিল্ডিং বক্স ক্লে মডেলিং কিট জাতীয় খেলনা উত্তম। এতে আপনার সন্তানের সৃজনশীল চিন্তার ইন্ধন জোগাবে, সেই সাথে বোর্ড গেম, পাজল দিলেও তার সময় কাটবে বেশ। আর ফুটবল ক্রিকেটের জন্য শিশুদের উপযোগী সামগ্রী হলে অনেক ভালো।

 

সন্তানের বয়স আটে পৌঁছলে তাকে দিতে পারেন ভিডিও গেম, বাইসাইকেলসহ আরো নানা খেলনা।

 

শিশুর বয়স যখন বারো হবে, তখন তাকে হবি সংক্রানত্ম জিনিসপত্র দিতে পারেন, যা নিয়ে সে অবসরের বিশেষ সময় কাটাতে পারে। সময় তাকে দিতে পারেন বাইনোকুলারসহ তার পছন্দের নানা খেলনা। সেই সাথে আপনার সন্তানকে অ্যাডভেঞ্চার জাতীয় বইও দিতে পারেন অনায়াসে। এতে তার মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠবে। সর্বোপরি একটা কথা খেয়াল রাখতে হবে, আপনার সন্তানকে কখনই দাহ্য জাতীয় খেলনা দেবেন না, এতে দুর্ঘটনার আশংকা থাকে।

 

খেলনা বাছাই

 

শিশুদের খেলনা হিসেবে সহজে অগ্নিকাণ্ড ঘটাতে পারে এমন খেলনা বাদ দিন। ব্যাটারিচালিত খেলনা পরিহার করুন এখনই। ব্যাটারি চালিত খেলনা থেকে তৈরি হওয়া শব্দ শিশুর কচি মস্তিষ্কে গভীর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। যার ফলে বড় ধরনের অনাকাক্সিক্ষত কোনো ক্ষতি হতে পারে। আবার এমনও হতে পারে শিশু খেলনা ঠিকই পছন্দ করছে; তবে খেলনা থেকে নির্গত শব্দ পছন্দ করছে না। শিশুদের জন্য এমন খেলনা বিশেষভাবে বাছাই করুন যা শিশু ইচ্ছামতো মজা করে খেলতে পারে, যেমন- ভবন নির্মাণ সামগ্রী আদলে বানানো খেলনা, কিচেন সেট বা ধরনের কিছু। শিশুর জন্য শিক্ষণীয় খেলনা বাছাই করতে মনোযোগ দিন। মনে রাখতে হবে খেলার সঙ্গে শিশু যে বিষয়টি শেখে তা বহু দিন শিশুর মস্তিষ্ককে পরিচালনা করে। সুতরাং খেলনা বাছাইয়ে দিতে হবে বিশেষ মনোযোগ। ভুলে গেলে হবে না খেলনা শুধু খেলনা নয়।
খেলনা বাছাইয়ে ছেলেমেয়ের বিভেদ উপেক্ষা করতে পারেন। বাচ্চা ছেলে যদি বার্বি সেট বা কিচেন সেট নিয়ে খেলে বা বাচ্চা মেয়ে যদি ট্রাক গাড়ি খেলনা নিয়ে মজে থাকে; ক্ষতি কী! শিশুর মনের বিরুদ্ধে কিছু না করাই ভালো। খুব বেশি নড়াচড়া করে এমন খেলনা তাদের দিতে পারেন তাতে বাচ্চার শারীরিক পরিশ্রমের অভ্যাস তৈরি হবে। শিশুদের অতিরিক্ত খেলনা কিনে দেয়া থেকে বিরত থাকুন। বহু খেলনা থাকলে শিশু সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে, যা তাকে এক রকম বিব্রত করে। সুতরাং বিষয়ে সাবধান হওয়া উচিত।


শিশুর জন্য খেলনা (দামসহ)

 

খেলনা ছাড়া শৈশব কি কল্পনা করা যায়? খেলনার কথা শুনলে শিশুরা বেজায় খুশি হয়। বাজারেও এখন বয়স অনুযায়ী শিশুদের নানা ধরনের খেলনা পাওয়া যায়। এর মধ্যে বাহারি ব্যাগে ভরা খেলনা সেটগুলোর চাহিদা সময় সবচেয়ে বেশি। নতুন ব্যাগভর্তি শিশুদের খেলনাগুলোর মধ্যে বৈচিত্র্য আছে। যাদের সুপারম্যান প্রিয় তাদের জন্য আছে বিভিন্ন রকমের এক ব্যাগ সুপারম্যান। আরো আছে গাড়িপাগল শিশুদের জন্য ব্যাগভর্তি কার, জিপ, হেলিকপ্টারসহ নানারকমের গাড়ি। ফাইটিং গেমের মধ্যে আছে এক ব্যাগ পিস্তল। একটু বড় শিশুদের জন্য আছে সৃজনশীল কিছু খেলনা। যেমন- আর্কিটেকচার সেট, বিভিন্ন রকমের পাজেল ইত্যাদি। মেয়েদের জন্য আছে বার্বি সেট, কিচেন সেট, মেকিং টয়, ডলস হাউসসহ আরো কিছু মজার মজার খেলনা। একদম ছোটদের জন্য আছে শিক্ষণীয় নানা খেলনা। যেমন_ এক বক্স রঙিন বর্ণমালা, বিভিন্ন পশু-পাখি, কিংবা কাপড়ের তৈরি নানা ছোট ছোট খেলনা।

 

কোথায় পাবেন : আপনি পাবেন বসুন্ধরা সিটি, সানরাইজ প্লাজা, রাপা প্লাজা, কিডস অ্যান্ড মম-বনানী, সিটি হার্ট পল্টন, নিউ মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোডসহ ছোট-বড় নানা খেলনার দোকানে।

 

দরদাম : এসব খেলনার বেশির ভাগেই দুই ধরনের সেট থাকে। একটা ছোট এবং একটা বড়। ছোটব্যাগ খেলনার দাম ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৬০০ টাকা। বড়ব্যাগ খেলনার দাম ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকার মধ্যে। এবার গিফট দেওয়ার জন্য হোক বা নিজের বাচ্চার জন্য, কিনে ফেলুন আপনার পছন্দের খেলনা সেট ব্যাগ।

 

খেলনা শুধু খেলনা নয়

 

খেলনা ছাড়া শৈশব কল্পনা করা যায়? কখনোই না। খেলনা আর শৈশব যেন একটি অপরটির সম্পূরক। প্রতিটি শিশুর খেলনা বলতে পাগল। এমন অনেক বাচ্চাকে দেখা যায়, যারা খেলনা ছাড়া ঘুমায় না, খায় না, এমনকি পড়তেও বসে না! সুতরাং খেলনা ছোটবেলার অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ। তবে অভিভাবকদের উচিত ভেবেচিন্তে শিশুদের খেলনা কিনে দেয়া। মনে রাখতে হবে এমন কোনো খেলনা শিশুর হাতে দেয়া যাবে না, যা তার মধ্যে কোনো ক্ষতিকর মনোভাবের জন্ম দেয়।
বাজারে এখন নানা বয়সী শিশুর জন্য নানা ধরনের খেলনা পাওয়া যায়। ভিন্ন ভিন্ন বাজারে থাকা খেলনা পাওয়া যাবে বাহারি প্যাকেট ভর্তি সেটে। এগুলোর চাহিদাই বাজারে বেশি। বৈচিত্র্যময় খেলনাগুলোর মধ্যে আছে সুপারম্যানের আদলে বানানো খেলনা। আবার যেসব বাচ্চা খেলনা গাড়ি পছন্দ করে তাদের জন্য নানা ধরনের খেলনা গাড়িও পাওয়া যাবে বাজারে, জিপ-হেলিকপ্টার-দেুাতলা বাসসহ নানা ধরনের খেলনা গাড়ি বাজারে আছে। এসব খেলনার ধরন বাচ্চার বয়স অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়। কেনার সময় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ফাইটিংপ্রিয় বাচ্চাদের জন্য রয়েছে ফাইটিং পিস্তলের ব্যাগভর্তি খেলনা। একেবারে শিশুর জন্য রয়েছে শিক্ষণীয় নানা খেলনা; যেমন- এক্স-বক্স, রঙিন বর্ণমালা, কাপড়ের তৈরি ছোট ছোট খেলনা কিংবা বিভিন্ন পশুপাখি ইত্যাদি।
তুলনামূলক কিছুটা বড় শিশুর জন্য রয়েছে দারুণ শিক্ষামূলক কিছু খেলনা। যার মধ্যে ভবন নির্মাণ সামগ্রীর আদলে বানানো বর্ণ পরিচয়ের খেলনা, রয়েছে নানা ধরনের পাজেল আবার মেয়ে বাচ্চার জন্য রয়েছে বিশেষ ধরনের খেলনা, যা কেবল মেয়েদের জন্যই তৈরি করা। যেমন- কিচেন সেট, বার্বি সেট, ডলস হাউস এবং মেকিং টয়সহ আরও নানা খেলনা। বাজারে সব সময় আরও নানা নতুন খেলনা আসে।

 

 

অনুসন্ধান এর বিষয়